বর্তমান যুগ হল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপ্লব যুগ। এর অভাবনীয় কারণে এখন সমগ্র পৃথিবীর মানব গোষ্ঠীর পারস্পারিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার বন্ধনে আবদ্ধ একটি একক সমাজে বসবাস করা সুবিধা উপভোগ করেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে শ্রেষ্ঠ এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময়টিতে কিছু নতুন প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটেছে। এখন এই সম্পর্কে বিস্তারিত তোমরা জানতে পারবে আমার এই পোস্টে।

তথ্য কি?

কোন কিছু সম্পর্কে ধারণা বা জ্ঞান লাভ করার জন্য সে সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনা ডাটা বা উপাত্তকে যৌগিক পরিশোধ যায় উপস্থাপনকে তথ্য বা Information বলে।

ডেটা বা উপাত্ত কি?

তথ্যের ক্ষুদ্রতম একক হল Data যা আসলে এলোমেলো কয়েকটি অক্ষর, সংখ্যা, চিহ্ন, ছবি ইত্যাদি যা নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করতে সক্ষম নয়।

এটি সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়ার জন্য পরিচালিত প্রসেসিং এর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোন শব্দ, সংখ্যা, ছবি, প্রতীক ইত্যাদি যেকোনো কিছুই উপাত্ত বা ডেটা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। ডাটা এবং তথ্যকে এক মনে হলেও এদের ভিতর কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে যা নিচে তোমাদেরকে বলা হলো।

উপাত্ত (ডেটা) তথ্য (ইনফরমেশন)
১. সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়ার জন্য কাঁচামাল হিসেবে প্রসেসিং এই ইনপুট করা বর্ণ, চিহ্ন বা সংখ্যা এসব কিছুই হলো ডাটা।১. ডাটা কে প্রক্রিয়াকরণ করে যে অর্থবহ অবস্থা পাওয়া যায় তাকে তথ্য বলে।
২. যেটা হলো প্রক্রিয়াকরণের পূর্ব অবস্থা, কম্পিউটারের যা ইনপুট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।২. ইনফরমেশন হলেও প্রক্রিয়াকরনের পরের অবস্থা যা কম্পিউটারে আউটপুট হিসেবে প্রদর্শিত হয়।
৩. সকল তথ্যই ডেটা।৩. সকল ডেটা তথ্য নয়।
৪. ডেটা কোন কিছুর অর্থবহ কিংবা পূর্ণাঙ্গ ধারণা দিতে পারে না।৪. যেকোনো তথ্য থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া যায়।
৫. ডেটা তথ্যের উপর নির্ভর করে না।৫. তথ্য সম্পন্ন ডেটার উপর নির্ভরশীল।
৬. কোন ছাত্রদের ভিন্ন বিষয় প্রাপ্ত নম্বর গুলো আলাদা আলাদাভাবে ডেটার উদাহরণ হতে পারে।৬. ওই ছাত্রের নাম, রোল নাম্বার, সবগুলো বিষয় নম্বর এবং তার ভিত্তিতে প্রাপ্ত মোট নম্বর এ সবকিছু একত্রে ছাত্রটির সুনির্দিষ্ট কোন ইনফরমেশন বা তথ্য কে নির্দেশ করে।

প্রযুক্তি কি?

গ্রিক শব্দ Techne (যার অর্থ হল শিল্প , কিংবা হাতের দক্ষতা) এবং logia শব্দ দুইটির সমন্বয়ে টেকনোলজি শব্দটি গঠিত। প্রযুক্তি বলতে বোঝায় সাধারণভাবে কতিপয় কৌশল ও প্রক্রিয়ার সমন্বিত জ্ঞানকে বোঝায়।

এটি কোন মেশিন, কম্পিউটার বা ডিভাইস সংশ্লিষ্ট ও সংযুক্ত হতে পারে। যার ফলে যে কোন ব্যক্তি এ সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনেও এগুলোকে ব্যবহার করতে সক্ষম হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

DATA

তথ্যপ্রযুক্তি (information technology) কি?

তথ্যপ্রযুক্তি সাধারণত তথ্য রাখা এবং একে ব্যবহার করার প্রযুক্তিকেই বোঝানো হয়। একে ইনফরমেশন টেকনোলজি (Information Technology-IT) নামে অভিহিত করা হয়।

তথ্যপ্রযুক্তি মূলত একটি সমন্বিত প্রযুক্তি যা যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, অডিও, ভিডিও, কম্পিউটারিং সম্প্রচার সহ আরো বহুবিধ প্রযুক্তির সমন্বয়ে দীর্ঘদিন ধরে চর্চার ফলে সমৃদ্ধ লাভ করে তথ্যপ্রযুক্তিরূপে আবির্ভূত হয়েছে।

সার্বিকভাবে বলতে গেলে Computer এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবহার মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিবেশন ব্যবস্থাকে তথ্যপ্রযুক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

তথ্যপ্রযুক্তির সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই বর্তমানে তথ্য ও প্রযুক্তিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology-ICT) বলা হয়।

বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে তথ্যের অবাক প্রবাহ এবং সাধারণ জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার কে আইন করে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশেও এমন একটি আইন ও প্রণীত রয়েছে যা তথ্য অধিকার ২০০৯ নামে পরিচালিত।

এ সকল কিছুর উদ্দেশ্য হচ্ছে আগামী বিশ্বকে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজের পরিণত করা, যার মূল ভিত্তি হবে ব্যাপক তথ্যের প্রবাহ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান।

আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিকাশের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রভাব অসীম। কম্পিউটারের নির্ভুল কর্ম সাধন, দ্রুতগতি, স্মৃতি সংক্রিয়করণ, নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তথ্য আদান প্রদান, যোগাযোগ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের জন্য তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা অসীম।

১. অপচয় রোধ করে এবং সময় সাশ্রয় হয়।
২. তথ্যের প্রাপ্ততা সহজ হয়।
৩. তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব হয়। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদি এর প্রকৃত উদাহরণ।
৪. প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডের গতিতে করে।
৫. সর্বক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
৬. ব্যবসা-বাণিজ্যে লাভজনক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে।
৭. ই-কমার্স এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা যায়।
৮. ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিসের অর্ডার দেওয়া যায়।
৯. শিল্প প্রতিষ্ঠানে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মনুষ্য শক্তির অপচয় কমায়।
১০. মানসম্পদ এর উন্নয়ন ঘটায়।
১১. ঘরে বসে অনলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
১২. ই গভারমেন্টস চালুর মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে সমন্বয় ঘটানো যায়।
১৩. সিটিজেন চারটের মত নাগরিক সুবিধা গুলো ঘরে বসেই পাওয়া যায়।
১৪. ঘরে বসেই বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফোন ইত্যাদি বিল দেওয়া যায়।

Disclaimer

Copyright Disclaimer Under section 107 of the Copyright Act of 1976, allowance is made for “fair use” for purposes such as teaching, scholarship, education, and research. Read Our DMCA Policy

Categorized in:

Technology,

Last Update: May 9, 2024